সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গুর নতুন ভেরিয়েন্ট খুবই ভয়াবহ, কী বলছেন চিকিৎসকরা

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:১২ অপরাহ্ন, ৫ই আগস্ট ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

এডিস মশার ভাইরাস ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। মশার এই ভাইরাসে অনেকেই ডেঙ্গু এনকেফেলাইটিসে (এক্সটেনডেড ডেঙ্গু শক সিনড্রোম) আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে এই আক্রান্তের হার কম। তবে এনকেফেলাইটিসে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার সর্বাধিক। আক্রান্ত হলে সাধারণত কেউ বাঁচে না। এই ভাইরাসটি মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করে। ওই সময় জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হয় এমনকি রোগী অজ্ঞানও হয়ে পড়ে। এ সময় রোগীকে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিতে হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু এখন প্রায় মহামারি আকার ধারণ করেছে। এই ডেঙ্গু রোগ দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক জেলায় রোগীর হার রাজধানী ঢাকার চাইতেও বেশি। এভাবে দেশজুড়ে রোগী বাড়তে থাকলে মহামারি দেখা দিবে এবং চিকিৎসা সেবায় মারাত্মক সংকট শুরু হবে। এখনই সময় থাকতে মশা নিধনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন চিকিত্সক ও কীটতত্ত্ববিদরা।

চিকিৎসকরা বলছেন, যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা এর ভয়াবহতা উপলদ্ধি করতে পারছেন। তারা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারছেন না শয্যা সংকটের কারণে। অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শয্যা বাড়িয়েও রোগী ভর্তি নিতে পারছেন না। চাহিদার তুলনায় চিকিৎসক নার্স ও কর্মচারীদের সংখ্যা সীমিত। কিন্তু এখনই ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। সামনে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও জটিল হলে রোগী সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। বেশিরভাগই চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। মশক নিধন কার্যক্রমে জড়িতরা এ জন্য দায়ী হবেন বলে চিকিৎসকরা মন্তব্য করেছেন। 


ডেঙ্গু এনসেফালাইটিস। উচ্চ জ্বর, আর্থ্রালজিয়া, কম প্লেটলেট গণনা, খিঁচুনি এবং বিভ্রান্তির ইতিহাস সহ একজন 44 বছর বয়সী মহিলা রোগীর বৈজ্ঞানিক ডায়াগ্রাম ।। ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু এনকেফেলাইটিস মূলত মস্তিষ্কে আক্রমণ করে থাকে। অল্প সময়ে রোগী মারা যান। এজন্য এই রোগের হাত থেকে বাঁচতে হলে মশা নিধনের কোন বিকল্প নাই। তাই মশা মারতে হবে। এদিকে মশা নিধনের কার্যক্রমও ততটা সচল নয়। অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব। কাউন্সিলরদের কার্যক্রম নিয়ে নগরবাসী সন্দিহান। মশা নিধন কার্যক্রম নিয়ে দুর্নীতি অনিয়মের খবর তো রয়েছেই। কিন্তু কারো যেন হুশ ফিরছে না।

আরো পড়ুন: বিএসএমএমইউতে ডাক্তার দেখাতে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট চালু

এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘এই ডেঙ্গু এনকেফেলাইটিস ব্রেইনে আক্রমণ করে থাকে। এতে রোগী খুব দ্রুত সময়ে খিচুনি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এজন্য রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু এটা এডিস মশার কামড়ে হয় সেজন্য মশা নিধন করতে হবে। মশা নিধনে ব্যর্থতার কারণে এই রোগে বিপুল সংখ্যক লোক আক্রান্ত হবে, সেটা কারো কাম্য নয়।

নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম বলেন, ‘এই রোগে ব্রেইন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আক্রান্ত হলে সাধারণত কেউ বাঁচে না। এই পরিসংখ্যান আমাদের কাছে রয়েছে।  তাই এ ধরনের উপসর্গ হলে বা দেখা দিলে কালবিলম্ব না করে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। আর মশা নিধনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। নইলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

এম এইচ ডি/ আই.কে.জে/

ডেঙ্গু স্বাস্থ্য এডিস মশা ভাইরাস এনকেফেলাইটিস নিউরোলজিস্ট মেডিকেল

খবরটি শেয়ার করুন